বরেন্দ্র অঞ্চল নামে খ্যাত রাজশাহীর বাগমারায় বৃষ্টির ভরা মৌসুমে বৃষ্টির কোন দেখা মিলছে না। প্রচন্ড খরায় রোপণকৃত রোপা-আমন জমি ফেটে চৌচির হয়ে পড়েছে। বৃষ্টির অভাবে অনেক জমি চাষ দিতে পারেনি কৃষকরা। অতিরিক্ত খরার কারণে রোপা-আমন চাষ নিয়ে কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন।
পানি সংকটে রোপণকৃত জমি ফেটে চৌচির হয়ে ধান মরে যাচ্ছে। এছাড়া সেচ কাজের ভাড়া, সার, কীটনাশক ও শ্রমিকের মূল্য বৃদ্ধি অন্যদিকে সেচযন্ত্রের ভাড়া দিতে কৃষকরা বেশামাল হয়ে পড়েছে। লোকশানের বোঝা মাথায নিয়ে রোদ বৃষ্টি উপেক্ষা করে আবারো রোপা-আমন চাষে নেমেছে। ধানের মূল্য হ্রাসে উৎপাদন খরচ জুটছে না। ফলে কৃষকরা ধানের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে মুলধন হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন।
কৃষককের দাবি কৃষি উৎপাদনের প্রধান উপকরণ সার, ডিজেল ও কীটনাশকের দাম বাড়ছে প্রতিনিয়তই কিন্তু কৃষকদের কৃষি পণ্যের দাম বাড়ছে না। এতে কৃষি ফসল উৎপাদন করে বেশী লোকশান গুনছেন। দু’ দফা সার দাম বেড়েছে। সরকার গ্রাম পর্যায়ের কৃষকদের কথা না ভেবে কৃষি উপকরণের দাম বাড়িয়ে চলেছে। গ্রামের কৃষকদের অবলম্বন কৃষি। অন্য কোন উপায় না থাকায় বাধ্য হয়ে আদি পেশা কৃষি উৎপাদনে মওসুমে রোপা-আমন চাষ অব্যাহত রেখেছেন।
উপজেলার বালানগর গ্রামের কৃষক আলতাফ হোসেন জানান, চার যুগ ধরে তিনি কৃষি কাজ করে আসছেন। কিন্তু এ বছরের ন্যায় এত ধানের লোকশানের মুখ কখনও তিনি দেখেননি। তিনি জানান, পেঁয়াজ, ধান, পাট, সবজির দাম কমছে। অন্য দিকে বাড়ছে সার, কীটনাশক ডিজেলসহ কৃষি উপকরণের দাম।
এ অবস্থায় মওসুমে আবারো রোপা-আমন চাষ করতে হবে। মহাজনের ঋণের টাকা পরিশোধ করতে পারিনি এ অবস্থায় ধান চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছি অনেক কৃষকই। পাওয়ারটিলারের ডিজেল খরচ, শ্রমিক খরচ দিয়ে ১ বিঘা জমিতে ১৭/১৮ হাজার টাকা খরচ হয়। যে ধান ১৪০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকায় বিক্রি হবার কথা তা না হয়ে মাত্র ১০০০/- টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। ধান উৎপাদনে উপকরণের দাম বৃদ্ধিতে ক্যাশ টাকা ফুরিয়ে ঋণের জালে আটকা পড়ে দিশেহারা হচ্ছেন গ্রামের কৃষকরা।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বাগমারায় এ মৌসুমে হাইব্রিড ৩১ হাজার হেক্টর ও উপর্শী জাতের ধান ১০ হাজার হেক্টর লক্ষ্যমাত্র ধরা হয়েছে। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবারে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা কমতি হতে পারে বলে তিনি শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
তবে বৃষ্টি নামার সম্ভবনা আছে বৃষ্টি হলে এখনও চাষ বৃদ্ধিসহ উৎপাদন বাড়তে পারে বলে জানান তিনি। এছাড়া ধানের চলতি বাজার মূল্য এলাকায় ১ হাজার ১শ টাকা থেকে ১২ টাকা বিক্রি চলছে। উপকরণের মূল্য বেশীতে কৃষকরা একটু লাভ কম পাচ্ছেন বলে তিনি মন্তব্য করেন।
টিএইচ